পবিত্র শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত

শবে মেরাজ কি ?

আমাদের ইসলাম ধর্মে পবিত্র শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনে অলৌকিক ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হল শবে মেরাজ। কেননা, শবে মেরাজে নবীজী বোরাকে করে ঊর্ধ্বাকাশ গমনের মাধ্যমে আরশে আজিমে পৌঁছান। এরপর তিনি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সাক্ষাত লাভ করেন। এই ঘটনার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক আমাদের প্রিয়নবী মুহাম্মাদ (সঃ) এর সম্মান আরো বৃদ্ধি করেছেন এমনকি গোঁটা সৃষ্টিজগৎকে তার এই উচ্চ মর্যাদা সম্পর্কে জানান দিয়েছেন।

আরো পড়ুনঃ    

ফযিলতপূর্ণ মাস রমাদান সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন। ইসলামে যাকাত দেয়া কতোটা গুরুত্বপূর্ণ

শবে মেরাজ কি

শবে মেরাজের সংক্ষিপ্ত ঘটনা

সময়টা ছিল রজবের ২৭ তারিখ রাত, মহানবী (সঃ) হযরত উম্মেহানির ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। নবীজী তখন তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায়, ঠিক তখনই জিব্রাইল (আঃ) এবং তার সাথে আরো কয়েকজন ফেরেশতাগন  ওই ঘরে প্রবেশ করেন। এরপর তাকে মসজিদে হারামে নিয়ে যান। শবে মেরাজের প্রথম যাত্রা যেহেতু শুরু হয় মসজিদে হারাম থেকে, এজন্য এটি মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্তবহনকারী ও পবিত্রময় স্থান। মসজিদে হারাম আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় শবে মেরাজের কথা। আর তাই, রজবের ২৭ তারিখটি মনে রাখার মতো একটি তারিখ! শবে-ই-মিরাজ, আল-ইসরা ওয়াল-মিরাজ রাত্রি নামেও পরিচিত। শবে মেরাজ সবচেয়ে অলৌকিক অভিজ্ঞতার মধ্যে একটি। এই রাতের গুরুত্ব বুঝানোর জন্য উপরে উল্লেখিত নাম গুলো ব্যবহার করা হয়। এই অবিশ্বাস্য যাত্রাটি এমন এক সময়ে ঘটেছিল যখন নবী (ﷺ) তীব্র কষ্ট ও যন্ত্রণার সম্মুখীন ছিলেন।

শবে মেরাজের সংক্ষিপ্ত ঘটনা

আল-ইসরা ওয়াল-মিরাজের সময়, জিবরাঈল (আঃ) বোরাককে কিছু কিছু স্থানে থামিয়ে  দিয়েছিলেন এবং আমাদের প্রিয় নবীকে (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিভিন্ন স্থানে প্রার্থনা করতে বলেছিলেন। যে স্থানগুলোতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর ধার্মিকদের অনুগ্রহ দান করেছেন। নবীজী (ﷺ) সিনাই পর্বতে যেখানে আল্লাহ তাওরাত নাজিল করেছিলেন, মুসা (আ.)-এর কবর এবং বেথলেহেমে, যেখানে ঈসা (আ.)-এর জন্ম হয়েছিল সেখানে প্রার্থনা করেন, অবশেষে যখন মসজিদুল আকসায় পৌঁছেন, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জানানো হয় যে, আদম (আঃ) থেকে ঈসা (আঃ)-এর সময় পর্যন্ত আল্লাহ প্রেরিত প্রত্যেক নবীর আত্মাকে তাঁর পিছনে সালাত আদায়ের জন্য আনা হয়েছে, যাতে তারা জানতে পারে  মুহাম্মদ (ﷺ) সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ।

মিরাজের রাতের দ্বিতীয় অংশে, হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) জিবরাঈল (আঃ)-এর সাথে আকাশে উঠেছিলেন। স্বর্গারোহণের সময়, তিনি সাত আসমানে আটজন নবীর সাথে সাক্ষাত  করেছিলেন। প্রত্যেক  নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এই বলে অভিবাদন জানিয়েছিলেন, “স্বাগত, হে ধার্মিক নবী এবং ধার্মিক ভাই!” [বুখারী] অবশেষে যখন তিনি স্বর্গের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছিলেন, তখন তাকে সিদরাতুল মুনতাহায় (একটি সীমানা যা অতিক্রম করতে পারে না) একা আল্লাহর আরশে আনা হয়েছিল – এখানেই আল্লাহ উম্মতকে বাধ্যতামূলক সালাতের উপহার দিয়েছিলেন।

 আরো পড়ুনঃ    বিশেষ কয়েকটি শবে কদর দোয়া   শবে বরাতের নামাজের নিয়ত কি?

শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত

শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত

উপরিউক্ত ঘটনাগুলোর দ্বারা আমরা এইটুকু বুঝতে পারছি যে মেরাজের রাত বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। আর তাই শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক। মুসলমানদের অধিকাংশই ২৭ রজবের রাতে মসজিদে তাদের সর্বাধিক সময় কাটায়, রোজা পালন করে, ইচ্ছাকৃত প্রার্থনা, কুরআন পাঠ, যিকির এবং দান খয়রাত করে। ইসরা এবং মিরাজের ঘটনাগুলি স্মরণ করাও ফজিলতপূর্ণ। তবে, এই রাতে বিশেষ কোন ইবাদতের কথা বলা হয়নি।

শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত

এ রাতে  নিজেকে জিকির-আজকারে ব্যস্ত রাখুন এবং পবিত্র রজব মাসে যতটা পারেন “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” (সাঃ) বলুন। সর্বশক্তিমান আল্লাহ আমাদের সকলের উপর তাঁর অফুরন্ত রহমত উপহারস্বরূপ বর্ষণ করুন। আমীন!

তথ্যসূত্রঃ

https://www.jaageer.com/blog/the-significance-of-shab-e-miraj-blog-237.html#:~:text=Muslims%20all%20around%20the%20world,subsequent%20ascension%20to%20the%20heavens.
https://www.sktwelfare.org/media-centre/blog/the-night-of-shab-e-miraj/

Leave a Comment