যে ১০ টি ফ্রিল্যান্সিং কাজ নতুনদের জন্য সহজ!

ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজ নতুনদের সহজ

যেহেতু ফ্রিল্যান্সিং বর্তমান বিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি পেশা। তাই, “ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজ নতুনদের জন্য সহজ? ফ্রিল্যান্সার হওয়া কি খুব কঠিন? ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার উপায়, এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কথা বলব এই আর্টিকেলে।

সহজ কথায়, একজন ফ্রিল্যান্সার হলেন মুলত একজন স্বাধীন কর্মী। তিনি নিজেই নিজের বস বলা যায়। জনপ্রিয়তার কারনে ফ্রিল্যান্সিং প্রফেশনে ঝোকের বসে অনেকে নেমে পড়েন ঠিকই কিন্তু অভিজ্ঞতা না থাকার কারনে ঝড়েও পড়েন খুব তাড়াতাড়ি। তাই ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজ নতুনদের জন্য সহজ তার সম্পর্কে কিছুটা রিসার্চ করে ধারনা নিয়ে তারপরই কাজে নামাটা শ্রেয়।

ফ্রিল্যান্সিং কাজ শেখার এবং জানার ক্ষেত্রে রিসার্চ করার মনমানসিকতা অবশ্যই থাকতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন অনলাইন কোর্স তো আছেই।চাইলে অনলাইন কোর্স গুলোও এনরোল করতে পারেন। এখানে বোঝার সুবিধার্তে আমি ফ্রিল্যান্সিং এর সহজতম কিছু কাজের ধারনা আপনাদের দেয়ার চেষ্টা করবো।তবে এটা মনে রাখা উচিত পৃথিবীতে যেকোন কাজের পেছনেই শ্রম এবং সময় আপনাকে দিতেই হবে।তবেই ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব।আর এই কাজগুলি এন্ড্রয়েট মোবাইল ফোন কিংবা ল্যাপটপ উভয় ডিভাইসেই আপনি সহজে করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজ নতুনদের সহজ

ফ্রিল্যান্সিং প্রফেশনের ক্ষেত্রে সহজতম কিছু কাজ:

১. সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার

২. কন্টেন্ট রাইটিং

৩. ক্যাপশন রাইটিং

৪. ওয়েব রিসার্চ

৫. ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট

৬. ডাটা এন্ট্রি

৭. ফটো/ভিডিও এডিটিং/লোগো ডিজাইন

৮. অডিও ট্রান্সক্রিপশন

৯. পডকাস্ট

১০. ভয়েস ওভার

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার

১. সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার অর্থাৎ যিনি সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন সাইট ম্যানেজ করেন,হতে পারে সেটা ফেইসবুক পেইজ,প্রোফাইল,গ্রুপ,ইন্সটাগ্রাম,ইউটিউব কিংবা ওয়েবসাইট। বিভিন বিজনেস পেইজ,গ্রুপ ওয়েবসাইটের মালিকরা সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার এপয়েন্ট করে থাকেন। যাতে করে তারা অন্যান্য কাজে সময় দিতে পারেন এবং আপনি প্রফেশনাল ওয়েতে সোশ্যাল সাইটগুলি ম্যানেজ করেন। আপনি শুধুমাত্র ঘরে বসেই সহজে একটু সময় দিয়েই কাজ করে যেতে পারবেন।

কন্টেন্ট রাইটিং

২. কন্টেন্ট রাইটিং

কন্টেন্ট রাইটিং হতে পারে একটি দারুন স্কিল যা কিনা আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং প্রফেশনে অনেক সহায়তা করতে পারে।এক্ষেত্র কিছুটা লেখালিখির দক্ষতা এবং কিছুটা সৃজনশীলতা আপনার মধ্যে থাকতে হবে। যাতে করে আপনি যা বা যে বিষয়ে লিখছেন তা অন্য কেউ পড়তে আগ্রহ পায়।যেমন টা হয়তো এখন আপনি আমার লিখা পড়ছেন। চাইলে কোন পেইজের জন্য কিংবা কোন ওয়েবসাইটের জন্য পেমেন্ট বেসিসে যেকোন বিষয় নিয়ে লিখতে পারেন,চাইলে নিজের ব্লগ পেইজ বা ওয়েবসাইট তৈরি করেও লিখতে পারবেন। রাইটিং স্কিল এবং শব্দভান্ডার ভালো হলে আপনি এই প্রফেশন টি সহজেই বেছে নিতে পারবেন।আপনি ব্লগ তৈরির নিয়ম ও ইনকামের বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে জানতে  চাইলে নিচের লিঙ্ক গুলিতে ক্লিক করুন।

ক্যাপশন রাইটিং

৩.ক্যাপশন রাইটিং

সোশিয়াল মিডিয়া ক্যাপশন রাইটিং ও হতে পারে ফ্রিল্যান্সিং পেশার সহজতম একটি উপায়।বিভিন্ন বিজনেস পেইজ কিংবা প্রফেশনাল সোশিয়াল মিডিয়া প্রোফাইলের জন্য কন্টেন্ট বা প্রোডাক্ট সামঞ্জস্য পূর্ণ ক্যাপশন লিখেও পার্ট টাইম কাজ করে যেতে পারে।এক্ষেত্রে আপনি তুলনামুলক কম সময় দিয়ে মোটামুটি ভালো আয় করতে পারবেন।এক্ষেত্রেও লেখালিখি এবং কিছুটা সৃজনশীলতা অবশ্যই আপনার মধ্যে থাকতে হবে।

ওয়েব রিসার্চ

৪. ওয়েব রিসার্চ

যদি আপনি যেকোন টপিক নিয়ে গুগল সার্চে খুব এক্টিভ হয়ে থাকেন তবে এই কাজ টি অবশ্যই আপনার জন্য।কাজটির জন্য আহামরী অভিজ্ঞতার কোন প্রয়োজন হয় না।শুধু সময় দিয়ে যেতে পারাটা জরুরি।এই কাজগুলি সাধারনত যেকোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন পণ্য লঞ্চ,তাদের মার্কেট ভ্যালু রিসার্চ, মার্কেট কম্পিটিটর,বিভিন্ন প্রোডাক্টের ম্যানুফেকচার এবং সাপ্লায়ার ডিটেইলস রিসার্চ এর জন্য ফ্রিল্যান্সার নিয়োগ দিয়ে থাকেন।যাতে করে তারা যাবতীয় ইনফরমেশন যেকোন একটা সেইফ হ্যান্ড হতে সহজেই পেতে পারেন।সুতরাং ওয়েব রিসার্চ হতে পারে আপনার জন্য সহজতম একটি কাজ।আপনি যদি ড্রপশিপিং বিজনেস সম্পর্কে জানতে চান তবে লিঙ্ক টিতে ক্লিক করুন।

ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট

৫.ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট

যেসব ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান, যেকোন ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিক কিংবা উর্ধতন কর্মকতা,যারা কিনা অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করেন এরকম অনেকেই ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট নিয়োগ করে থাকেন।এক্ষেত্রে কাজ মুলত হয় ডেইলি বেসিসে মেইলগুলি চেক করা, রিপ্লাই করা,এপয়েন্টমেন্ট বুকিং, সোশিয়াল সাইটের ইনবক্সগুলির রিপ্লাই করা,ভ্রমন পরিকল্পনা তৈরি করা ইত্যাদি।যারা প্রফেশনালিজম বুঝেন, যত্ন এবং ধৈর্য্য নিয়ে কাজ করতে পারেন তারা ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে এই কাজটি বেছে নিতে পারেন।

ডাটা এন্ট্রি

৬. ডাটা এন্ট্রি

ধরুন যেকোন একটি প্রতিষ্ঠান আপনাকে কিছু ইনফরমেশন দিলো এবং বললো এই ডাটগুলি আপনি এক্সেল স্প্রেডশীট এ ইনপুট করে একটি ডোকুমেন্টেশন রেডি করে দিবেন,যাতে করে তারা সহজেই যখন যেই বিষয় রিলেটেড ডাটা ইনফো তাদের দরকার তা তারা খুজে পায় এবং চাইলে যেকোন ওয়েবসাইট এ কিংবা প্রেজেন্টেশনে তারা ব্যবহার করতে পারে।মুলত ডাটা এন্ট্রির বেসিক লেভেল এটাই।যদিও বা এই প্রফেশনের পরিসর টা বড়ো এবং বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে।তাও বেসিক লেভেলের কাজগুলি আপনি একটু ইন্টারনেট রিসার্চ করে সহজে শুরু করতে পারবেন যেকোন প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে।তবে এই কাজের জন্য আপনার কম্পিউটারের ব্যবহার জানা জরুরি।

লোগো ডিজাইন

৭.ফটো/ভিডিও এডিটিং/লোগো ডিজাইন

ফটো কিংবা ভিডি এডিট করতে পারা কিছুটা ভালো স্কিল থাকলেই আপনি এই কাজটিকে প্রফেশন হিসেবে নিতে পারেন।বিভিন্ন বিজনেস পেইজ,সোশিয়াল মিডিয়া প্রোফাইলের জন্য ফটো এডিটিং এবং ভিডিও এডিটিং এর কাজ করতে পারেন।বিজনেস রিলেটেড প্রোডাক্ট,মডেলদের ছবি এডিটিং এর কাজ কিংবা বিভিন্ন ছোট ছোট রিলস বা ভিডিও এডিটিং এর কাজ ও কিন্তু এখন খুব সহজেই ঘরে বসে করে ইনকাম করা যায়।যেকোন বিজনেস পেইজের লোগো ডিজাইনিং নিয়েও কাজ করতে পারেন।সেক্ষেত্রে লোগো ডিজাইনিং এর আলাদা বিভিন্ন পেইড এপস রয়েছে সেগুলোর ব্যবহার আপনাকে জানতে হবে।।আপনি ভিডিও এডিটিং কিভাবে শিখব সম্পর্কে জানতে  চাইলে লিঙ্কে ক্লিক করুন।

অডিও ট্রান্সক্রিপশন

৮. অডিও ট্রান্সক্রিপশন

আচ্ছা ছোটবেলায় শ্রুতি লিখনের কথা কি আপনাদের মনে পড়ে???শুনে শুনে লিখা!! জ্বি।ব্যাপারটা আসলে এমন টাই।এক্ষেত্রে আপনাকে একটা অডিও দেয়া হবে সেটা আপনি শুনে লিখবেন। তা হতে পারে কারো বক্তব্য,হতে পারে কোন কথোপকথন,মিটিং,ফোনলাপ।সোজাসুজি ভাবে বলতে গেলে সিনেমার স্ক্রিনের নিচের দিকটায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাষার যে সাবটাইটেল দেখা যায় সেটাও অডিও ট্রান্সক্রিপশনের অন্তর্ভুক্ত।এটা খুব কঠিন কাজ নয়।আপনি চাইলে এই কাজটিও শুরু করতে পারেন।

পডকাস্ট

৯. পডকাস্ট

আপনি কখনো নিজের কন্ঠের কোন কথোপকথন রেকর্ড করে সোশিয়াল মিডিয়ায় আপ্লোড করেছেন?

যদি করে থাকেন তবে এটাই পডকাস্ট।এখন এই কাজটি আপনি আপনার জন্য ও করতে পারেন কিংবা অন্য কারো জন্য ও।বিভিন্ন সোশিয়াল মিডিয়া প্রোফাইল,ব্লগ,ইউটিউব চ্যানেলে যারা নিজের কন্ঠে রেকর্ড করা কন্টেন্ট আপ্লোড করেন,এটাকেই বলা হয় পডকাস্টিং।পশ্চিমা দেশগুলো অনেক আগে থেকেই এই প্রফেশন টি খুবই জনপ্রিয়।এর জন্য আপনার মাইক্রোফোন/রেকডিং ডিভাইস অবশ্যই লাগবে।আপনার উচ্চারন, কথা বলার ধরন যদি সুন্দর এবং শ্রতিমধুর হয় তবে এই কাজটি আপনিও নিতে পারেন প্রফেশন হিসেবে।

ভয়েস ওভার

১০. ভয়েস ওভার

ভয়েস ওভার অর্থাৎ বিভিন্ন ভিডিও কন্টেন্ট বা ভিডিওগ্রাফির জন্য ভয়েস দেয়া,হতে পারে স্টোরি টেলিং,হতে পারে নাটকের সংলাপ,হতে পারে যেকোন ভিডিওকন্টেন্টের ভয়েস।এর জন্য নয়েস প্রুভ রেকর্ডিং ডিভাইস প্রয়োজন হবে আপনার।এই কাজ টি অত্যন্ত সহজ।এর জন্যও অবশ্যই আপনার কথা বলার ধরন,উচ্চারন প্রমিত হতে হবে অবশ্যই।

শেষান্তে,

উপরে আমি যে কটা ফ্রিল্যান্সিং কাজের কথা বলেছি,যা আমার কাছে নতুন দের জন্য অনেকটাই সহজ ভাবে শুরু করা সম্ভব হবে বলে মনে হয়েছে।তবে হ্যাঁ এখানে কোন কাজই এমন না যে আজ করলেন আর কাল ফলাফল পেয়ে গেলেন।সময়,শ্রম,অধ্যাবসায় যেকোন কাজের জন্যই অত্যন্ত জরুরি।আর স্বাধীনভাবে কাজ করতে গেলে সেক্ষেত্রে ধৈর্য্য দিয়ে লেগে থাকতে তো হবেই।উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলি নিয়ে একটু রিসার্চ করতে পারেন,কোনটা আপনার জন্য সুবিধাজনক হবে তা বুঝে কাজে নেমে পড়ুন।

আশা করি ভালো কিছুই অপেক্ষা করছে আপনার জন্য।শুভকামনা এবং সুস্থতা কামনা করছি সবার জন্য।

তথ্যসূত্রঃ 

https://www.upwork.com/resources/easy-projects-on-upwork-get-started-working

https://outandbeyond.com/best-freelance-jobs-for-beginners/

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top