আপনি কি অনলাইনে টাকা ইনকাম করতে আগ্রহী? আসলেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করা যায় কি না জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। জ্বি, এমন টাকা ইনকাম করার ওয়েবসাইট অবশ্যই আছে, যেখান থেকে আপনি পার্ট টাইম বা ফুলটাইম কাজ করে ডলার বা টাকা ইনকাম করতে পারবেন। অবশ্য, কতটা আয় করতে পারবেন তা নির্ভর করছে আপনার স্কিল ও সময়দানের উপর।
আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে বাংলা ও বিদেশি কোন কোন ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে ও কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায় তা সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জেনে যাব।
ফ্রিল্যান্সিং কাজের ওয়েবসাইট
ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং এর জন্য বহুল পরিচিত ও জনপ্রিয় অনেকগুলো ওয়েবসাইট এর মধ্যে রয়েছে upwork.com, fiverr.com, freelancer.com,seoclerk.com,.peopleperhour.com ইত্যাদি। এসব ওয়েবসাইটে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের রেট ও স্কিল অনুযায়ী বিভিন্ন কাজ পেয়ে থাকেন এবং লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকেন। এগুলো একদম প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সিং এর সাইট যেখানে একজন ফ্রিল্যান্সারকে একটি আকর্ষণীয় প্রোফাইল রেডি করে নিয়ম অনুযায়ী কাজের জন্য বিড করতে হয়। এই সাইটগুলোতে যে ধরনের কাজ পাওয়া যায়-
- ওয়েব ডিজাইনিং ও ডেভেলপমেন্ট
- গ্রাফিক্স ডিজাইন
- কন্টেন্ট রাইটিং
- ডিজিটাল মার্কেটিং
- এস ই ও
- ডাটা এন্ট্রি
- টাইপিং
- সাইবার সিকিউরিটি
- App ডেভেলপমেন্ট
- UI/UX ডিজাইন ইত্যাদি।
তবে এই সাইটগুলোতে কাজের আবেদন করার আগে নিজেকে যথাযথভাবে কোন একটা কাজে দক্ষ করে গড়ে নিতে হবে। তাহলে কাজের অভাব হবেনা। অবশ্য নতুন দের কাজ পেতে একটু সময় লাগে। যদি ভাল কাজ দিয়ে ক্লায়েন্ট সন্তুষ্ট না করতে পারেন তবে রেটিং খারাপ হয়ে পরবর্তীতে কাজ পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়বে। বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতীয়রা টাকা ইনকাম করার ওয়েবসাইট গুলোতে ফ্রিল্যান্সিং প্রচুর কাজ করছে ও ডলার ইনকাম করছে।আপনি যদি ভিডিও এডিটিং সম্পর্কে জানতে চান তবে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।
সার্ভে ওয়েবসাইট
সার্ভে হচ্ছে বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রশ্নের উত্তর দেয়া ও মতামত দেয়া। এই সার্ভে তে অংশ নিয়েও টাকা ইনকাম করা যায়। তবে এই সুযোগটা বাংলাদেশে বা বাংলা ভাষায় কম বা একেবারে নেই বললেই চলে। আপনি যদি ইংরেজি ভাষায় ভাল হয়ে থাকেন তবে সার্ভের জন্য অনেক ইংরেজি ওয়েবসাইট পাবেন। যেখান থেকে টাকা ইনকাম করা যাবে। তবে মনে রাখতে হবে সার্ভের কাজ শুধু হাত খরচ উঠানোর জন্য বা পার্ট টাইম কাজ হিসাবে করতে পারেন এতে অনেক বেশি আয় হয়না এবং সার্ভে ওয়েবসাইট ব্যবহার করার জন্য আপনার vpn ব্যবহার করতে হবে।
বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানি তাদের প্রোডাক্ট এর ফিচার, উন্নয়ন, কাস্টমার এক্সপেকটেশন সম্পর্কে মতামত জানতে এসব পেইড সার্ভের ব্যবস্থা করে থাকে। সার্ভে করে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে দিনে ০.১০ থেকে ১০ ডলার পর্যন্ত আয় করা যায়। আপনাকে প্রথমে ব্রাউজ করে জেনে নিতে হবে কোন ওয়েবসাইট ভাল পে করে এবং পেয়মেন্ট মেথড সহজ সেগুলো তে একাউন্ট করে শুরু করতে পারেন সহজ ইনকাম। জনপ্রিয় সার্ভে ওয়েবসাইট এর মধ্যে রয়েছে,
ইত্যাদি।
মাইক্রো জব ওয়েবসাইট
মাইক্রো অর্থ ছোট। মাইক্রো জব মানে ছোট ছোট কাজের ওয়েবসাইট। আমরা জানি অনলাইনে কাজ করে ইনকাম করা যায়। কিন্তু এই অনলাইন কাজ গুলোর অনেক রকম আছে, ভাগ আছে। আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন বা মার্কেটিং হটাৎ করে করতে পারবেন না, এগুলো শিখার জন্য অনেক সময় ব্যয় করতে হয়। আবার কিছু ছোট ছোট কাজ আছে যেগুলোর জন্য কোন স্কিল শেখার প্রয়োজন হয়না। সেগুলোই হল মাইক্রো জব এবং এই কাজগুলো পাওয়ার জন্য অনেক ওয়েবসাইটও আছে যা থেকে ইনকাম করা যাবে। তবে এই কাজগুলো স্টুডেন্ট বা হাউজওয়াইফদের জন্য উপযুক্ত যারা দিনের কিছু অংশ ব্যয় করে নিজেদের হাতখরচ উঠাতে পারবেন।
মাইক্রোজব বলতে যেসকল কাজ বুঝায় তা হল:
- গেম খেলা
- ভিডিও দেখা
- ইউটিউবে চ্যানেল লাইক, সাবস্ক্রাইব করা
- ওয়েবসাইট ভিজিট করা
- টাইপিং
- পোস্ট করা, শেয়ার করা
- ফেসবুক একাউন্ট বানিয়ে বিক্রি করা
- সার্ভেতে অংশ নেয়া
- মোবাইল ফোনে App install করা ইত্যাদি
এই সহজ কাজগুলো কোন স্কিল ছাড়াই অল্প সময় ব্যয় করে করা যায় এবং অল্প অল্প করে টাকা ইনকাম করা যায়। বাংলাদেশি হিসেবে আপনাকে দেখে নিতে হবে কোন ওয়েবসাইটএর পেমেন্ট পদ্ধতি আপনার জন্য সহজ ও সুবিধাজনক। মাইক্রোজব ওয়েবসাইট এর মধ্যে কোন গুলো বিশ্বস্ত ও পেমেন্ট ভাল দেয় তাও রিসার্চ করে জেনে নিয়ে নিয়ম অনুযায়ী একাউন্ট খুলে নিবেন। উল্লেখযোগ্য কিছু মাইক্রোজব ওয়েবসাইট এর মধ্যে রয়েছে –
Fiverr ইত্যাদি।
ইউটিউব
ইউটিউবে ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে টাকা ইনকাম করা যায় সহজেই। ছোট বাচ্চারাও এখন ইউটিউবে ভিডিও বানাচ্ছে এবং ভালই আয় করছে। যেকোন শিক্ষামূলক, বিনোদনমূলক, যার যা স্কিল আছে তা একটি ভাল ক্যামেরায় ধারণ করে নিজের ইউটিউব চ্যানেল এ আপলোড করছে। সেখান থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সাবস্ক্রিপশন ও ভিউ হবার পর ইউটিউব থেকে আয় করা শুরু হয়।
তবে দিন দিন ইউটিউব থেকে ইনকাম করা কড়া প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়ছে। ভিডিও কনটেন্ট মানসম্মত হতে হবে এবং ইউটিউবের কিছু নিয়ম কানুন ও নির্ধারিত যোগ্যতা অর্জন করে নিতে হবে। যেমন: নিজের ইউটিউব চ্যানেলের ১ বছরে চার হাজার ঘন্টা ওয়াচ টাইম থাকা, ১০০০ সাবস্ক্রিপশন থাকা ইত্যাদি।
ইউটিউব থেকে বিভিন্ন উপায়ে আয় করা যায়। এক হল, বিজ্ঞাপন দিয়ে। ভিডিওর শুরু বা যেকোন সময়ে আমরা যে বিভিন্ন এড দেখি সেগুলোর মাধ্যমে। দুই,Affiliate link যুক্ত করে, তিন, বিভিন্ন কোম্পানির স্পনসরশীপ নিয়ে ইত্যাদি। সাধারণত, একটি ভিডিওতে ১০০০ ভিউ হলে তা থেকে মান অনুযায়ী ১ থেকে ২৫ ডলার পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।
বাংলা ব্লগ ওয়েবসাইট
আমাদের বাংলাদেশি বেশ কিছু ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি হয়েছে যা থেকে লেখালেখি করে টাকা আয় করা যায়। এসব ওয়েবসাইটে নিয়ম অনুযায়ী একাউন্ট খুলে বাংলা বা ইংলিশে আর্টিকেল লিখে বা ছোট ছোট ইনফর্মেটিভ পোস্ট লিখে বিকাশ/ নগদ/ব্যাংক খুব সহজ পেমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে আয় করার সুযোগ দেয়া হয়ে থাকে। এরকম কিছু ওয়েবসাইট এর নাম দিয়ে দিচ্ছি-
Roar Bangla ইত্যাদি।
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার সহজ উপায় ধাপে ধাপে শিখতে চান তবে লিঙ্কে ক্লিক করুন।
বাংলা ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট
আপওয়ার্ক বা ফাইভার এর মত বাংলাদেশেও কিছু টাকা ইনকাম করার ওয়েবসাইট তৈরি হয়েছে যেখানে লোকালি কাজ পাওয়া যায়। গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইনিং, এপ ডেভেলপমেন্ট, কন্টেন্ট রাইটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, এস ই ও বা ডাটা এন্ট্রির কাজ সব ধরনেরই পাওয়া যায়। এরকম কিছু বাংলা ওয়েবসাইট এর নাম-
ইত্যাদি
ওয়েবসাইটে কাজ করে টাকা ইনকাম করা অনেক ধৈর্য্য ও পরিশ্রম এর ব্যাপার, অফলাইন কাজের মতই। চাইলেই অনলাইনে কাজ পাওয়া যায়না। প্রথমে স্কিল অর্জন করে একটি ভাল প্রোফাইল গঠন করতে হয়। তারপর নিয়মিত সময়দান করে ও ধৈর্য্য ধরে পছন্দসই কাজ খুঁজে নিতে হয়।ক্লায়েন্টের সন্তুষ্টি আরো অনেক কাজের সুযোগ খুলে দেয়। টাকা ইনকাম করার ওয়েবসাইট আছে অনেক, যা এই আর্টিকেল হতে জানতে পারলেন, কিন্তু সত্যি সত্যি ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে টাকা আয় করা পর্যন্ত যাওয়া একদম সহজ নয়! এর জন্য যথেষ্ট পরিমানে খাটুনি ও যোগ্যতা তৈরি করে নিতে হবে। তাহলেই সফল হবেন।
তথ্যসূত্রঃ