ঘুম থেকে উঠে দিনের শুরুটাই হয় আমাদের এক কাপ চা কিংবা কফি দিয়ে। আমরা মনে করি, শরীর কে চাঙ্গা করতে কিংবা একঘেয়েমি দূর করতে হলে এই চা বা কফি যথেষ্ট। অনেকে আবার বলে যে, চা খেলে নাকি ঘুম আরো বেশি পায় তাই কফিটাই নাকি ঘুম ঘুম ভাব টা কাটিয়ে ফেলার জন্য সবথেকে বেশি কার্যকরী।
আমার অফিস কলিগ তনুর নাকি প্রতিদিন কম করে হলেও তিন কাপ কফি খেতেই হয়। কারন, তা নাহলে সে কোনভাবেই কাজে মন বসাতে পারে না। একমাত্র কফি খেলেই নাকি ওর ঘুম ভাবটা কেটে যায়। আর তাই কর্মস্থলে থাকলেও সে ক্লান্ত অনুভব করেনা। আচ্ছা, আপনাদের কি মনে হয় কফি খেলে কি ঘুম কম হয় নাকি ঘুম ঘুম ভাবটাই চলে যায়? আসুন তাহলে জেনে নেয়া যাক।
ঘুম কাটানোর এই কাজটা মূলত করে ক্যাফেইন নামক এক তিক্ত পদার্থ। এক কাপ চায়ে যদি ১০০ গ্রামে ১১ গ্রাম ক্যাফেইন থাকে তাহলে এক কাপ কফিতে ১০০ গ্রামে ৪০ গ্রামই থাকে ক্যাফেইন। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে কেন কফি খেলে ঘুমের ভাবটা জলদি কেটে যায়। এবার আসি কফি খেলে কি ঘুম কম হয় কিনা।
কফি রেগুলার খেলে এর প্রভাব কম বেশি শরীরে পরে। আমাদের শরীরে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে যার নাম এডেনোসিন। এই পদার্থের জন্য আমরা ক্লান্তি বা ঘুম বোধ করি। এমনকি কফি খাওয়ার পর ক্যাফেইন আমাদের মস্তিস্কের এডেনোসিন এর কাজ করা আটকে দেয়। যার ফলে আমরা সারাদিন কোনরকম ক্লান্তি অনুভব করিনা বরং আরো চাঙ্গা অনুভব করি। কিন্তু, দিনশেষে যখন ক্যাফেইন এর কাজ বন্ধ হয়ে যায়, শরীরের সব ক্লান্তি তখন একসাথে জড়ো হয়। যার ফলে নিজেকে ঘুম থেকে আটকানো অনেক মুশকিল হয়ে পড়ে।
আরো পড়ুনঃ রাতে ঘুম না আসার কারন ও প্রতিকার
এখন প্রশ্ন হল আমরা যদি আমাদের স্বাভাবিক ঘুমের প্রক্রিয়া কে ক্যাফেইন গ্রহনের মাধ্যমে বিলম্বিত করি প্রতিদিন তাহলে কি এটি আমাদের শরীরে কোন ধরনের ক্ষতি সাধন করতে পারে? এক গবেষনায় দেখা গিয়েছে, যারা নিয়মিত কফি খেতে অভ্যস্থ তাদের ঘুমের মাত্রা অনেক কমে যায়। এমনকি, অতিরিক্ত কফি খেলে একটা সময় পরে আর ঘুমানোর সঠিক সময় হলেও আর ঘুম হয় না। তাইতো অতিরিক্ত সবকিছুই হানিকর। মজার ছলেই হোক কিংবা ঘুম তাড়ানোর জন্যই হোক এটি শরীরে ঘুমের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ করে ফেলে। কফি খাওয়া যেন কোনভাবেই বদঅভ্যাসে পরিনত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তাই এখন থেকেই দরকার সঠিক সচেতনতা।
তথ্যসূত্রঃ
https://www.medicalnewstoday.com/articles/326443#how-can-coffee-make-you-feel-tired